1. kabir28journal@yahoo.com : Abubakar Siddik : Abubakar Siddik
  2. kabir.news@gmail.com : Kabir :
মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৩ পূর্বাহ্ন

ঘুরে আসুন ইন্ডিয়ার অসম।।

সাংবাদিকের নাম:
  • আপডেট টাইম: বুধবার, ১৩ মার্চ, ২০২৪
  • ৮৩ ০০০ জন পড়েছে।

জনজীবন ডেস্ক—

লিয়াকত হোসেন  খোকন –

অসমের যত জেলা – পর্ব ১

 

শিলচর ভারতের উত্তর -পূর্বে অবস্থিত আসাম বা অসম রাজ্যের কাছাড় জেলার সদর শহর। তাছাড়া দক্ষিণ আসামের একটি প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র এই শিলচর। 

মণিপুরের কিছু অংশ এবং মিজোরামের জন্য এই শহরের অর্থনৈতিক গুরুত্ব অপরিসীম। 

শিলচরে বসবাস করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীরা। 

শিলচরের শাসক শিলচর পৌরসভা। এই পৌরসভার অন্তর্ভুক্ত ৩০ টি ওয়ার্ড রয়েছে। 

শিলচর শহরের আয়তন ৬.৬১ বর্গমাইল। 

শিলচর মহানগরের আয়তন ১১.৭৩ বর্গমাইল। 

শিলচর শহরের জনসংখ্যা ২০১১ সালের হিসাব অনুযায়ী ২,২৮,৯৮৫ জন। 

শিলচরের সরকারি ভাষা বাংলা। 

স্থানীয় ভাষা সিলেটি। 

ব্রিটিশ শাসনামলে বরাক নদীতে মালবাহী জাহাজের নোঙর পড়তো। ধীরে ধীরে এই অঞ্চলে হাট বাজার গড়ে ওঠে ও ব্যবসার অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠতে থাকে। নদীর তীরবর্তী অঞ্চল নুড়িপাথরে ঢাকা থাকায় ডিঙি বা বড়ো মালবাহী জাহাজ বাঁধতে সুবিধা হতো। স্থানীয়রা এই কারণে জায়গাটিকে শিলের চর বলে অভিহিত করতে থাকে, যার অর্থ নুড়ি পাথরে আবৃত নদীর তীর। সময় প্রবাহে শিলের চর, আস্তে আস্তে শিলের চর থেকে শিলচর রূপ পায়। 

বিশ্বের প্রথম স্থাপিত পোলোক্লাবটি অবস্থিত। এটি স্থাপিত হয় ১৮৫০ সালে। 

ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বরাক নদীর তীরে অবস্থিত এই শিলচর শহরকে উত্তর -পূর্ব 

ভারতের শান্তিপূর্ণ জায়গা আখ্যায়িত করেন এবং শান্তির দ্বীপ বলে ঘোষণা দেন। 

ভাত এবং মাছ এখানকার লোকদের প্রধান খাদ্য। 

শুটকি এবং চুঙ্গা পিঠা শিলচর জেলার মানুষের বিখ্যাত উপাদেয় খাদ্য। 

শিলচরের দর্শনীয় স্থান হল – ডলু হ্রদ, শালগঙ্গা বিষ্ণু মন্দির, গরুড় মন্দির, মণিহরণ সুড়ঙ্গ, কাঁচাকান্তি কালী মন্দির, ভুবনেশ্বর মন্দির, গান্ধীবাগ পার্ক , ইসকন মন্দির, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ মন্দির, গোবিন্দভোজনালয়, খাসপুর ডিমাসা -কাছাড়ি রাজাদের সিংহদ্বার, সূর্যদ্বার, দেবালয়, মন্দির। 

শিলচর শহর চা, চাল এবং আরো নানারকম কৃষিজাত দ্রব্যের জন্য বিখ্যাত। কাগজের কল, সিমেন্ট কারখানা এবং চা -পাতা উৎপাদন এখানকার প্রধান শিল্প। 

শিলচর আসামের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগর। শিলচর ভারতের অন্যান্য জায়গার সঙ্গে রেল, সড়ক এবং আকাশপথের মাধ্যমে যুক্ত। 

শিলচর পৌরসভায় হিন্দুদের সংখ্যা ১৫৪৩৮১ জন। 

মুসলিম ২১৭৫৯ জন। জৈন ১৪০৮ জন। খ্রিস্টান ১০৫২ জন। শিখ ৭৭ জন। বৌদ্ধ ৩৯ জন। অন্যান্য ১৪৯ জন। 

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রাঙ্গনটি শিলচর শহরেই অবস্থিত। উল্লেখযোগ্য কলেজগুলো হলো গুরুচরণ কলেজ, কাছাড় কলেজ, রাধামাধব কলেজ। 

শিলচর বাংলা ভাষা আন্দোলনের জন্য অন্যতম স্থান। তৎকালীন আসাম সরকার তথা আসামের মুখ্যমন্ত্রী বিমলা প্রসাদ চলিহা অসমীয়া ভাষাকে আসামে বাধ্যতামূলক করার জন্য একটি আইনের অনুমোদন করলে শিলচরের বাঙালি সমাজ তার তীব্র প্রতিবাদ জানায়। ১৯৬১ সালের ১৯ শে মে আসাম পুলিশ শিলচর রেলওয়ে স্টেশনে নিরস্ত্র প্রতিবাদী বাঙালির ওপর গুলি চালায়। বাঙালির অধিকার ও বাংলা ভাষা আন্দোলনের লড়াই করতে গিয়ে এগারো জন প্রতিবাদী বাঙালি শহীদ হন। এরা হলেন – কানাইলাল নিয়োগী, চণ্ডীচরণ সূত্রধর, হিতেশ বিশ্বাস, সত্যেন্দ্র কুমার দেব, কুমুদ রঞ্জন দাস, সুনীল সরকার, তরণী দেবনাথ, শচীন্দ্র চন্দ্র পাল, বীরেন্দ্র সূত্রধর, সুকোমল পুরকায়স্থ এবং কমলা ভট্টাচার্য। 

এছাড়াও আসামে বাংলা ভাষার জন্য ১৯৭২ সালের ১৭ আগষ্ট শহীদ হন বিজন চক্রবর্তী। 

১৯৮৬ সালের ২১ জুলাই শহীদ হন দু’জন। তাঁরা হলেন -জগন্ময় দেব ও দিব্যেন্দু দাস। 

এই জনবিদ্রোহের পরে আসাম সরকার তার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে ও দক্ষিণ আসাম বরাক উপত্যকায় বাংলা ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে বাধ্য হয়। 

প্রসঙ্গক্রমে বলতে হয়, ১৯৪৭ সালে যারা ভারত ভাগাভাগির সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের বিচারবুদ্ধি, বিবেচনাবোধ সম্ভবত অপরিকল্পিত থাকায় তারা বরাক উপত্যকার অংশটুকু বাংলাদেশের ভিতর অন্তর্ভুক্ত না করে ভারতের আসাম রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। 

আসাম বলি আমরা আর ভারতীয়রা বলে ” অসম “। সেই আসামের এক মনোরম সুন্দর শহর শিলচর। শিলচর ঘুরে দেখার সেই স্মৃতি আজও বারে বারে মনে পড়ে। খুব ভালো লেগেছিল শিলচরের শীলাকে – দেখতে অনেকটা চিত্র নায়িকা লীলা চিৎনিশের মতই যেন।। 

কাছাড় জেলার সদরদপ্তর শিলচর বাঙালি প্রধান এলাকা।

বরাক নদী বয়ে চলেছে শিলচর শহরের পূর্ব প্রান্ত দিয়ে। মনোরম প্রকৃতির মাঝে সূর্যোদয় ও সুন্দর সুরমা ভ্যালির এই শিলচরে। 

এখানে পাহাড়ের পিছু থেকে উদিত সূর্যের প্রথম কিরণ নদীর জলে ক্ষণে ক্ষণে রং বদলায়। 

শিলচরে গিয়ে উঠেছিলাম হোটেল গীতাঞ্জলিতে। ২ ঘণ্টা চুক্তিতে একটা রিকশা নিয়ে বের হলাম শিলচর শহর দেখতে। 

একে একে দেখলাম মেডিকেল কলেজ, ১১ শহীদের রক্তে রাঙা শহীদ স্তম্ভ (গান্ধীবাগে), হরিসভা ও লক্ষ্মীর মন্দির।

বিকেলে বসে আছি বরাক নদীর তীরে। দু’কূলের দৃশ্য দেখে খুব করে ভাবছিলাম আসামকে নিয়ে, ঠিক তখনই কে যেন পিঠে হাত রাখল।

 

‘কী দেখছেন? শিলচরের রূপ …।’

বললুম, হ্যাঁ। অপরূপ শিলচরকে যত দেখছি তত যে মনোবাসনা পূরণ হচ্ছে না। কোথায় উঠেছেন?

– রেলস্টেশনের একটু দূরে গীতাঞ্জলিতে। কথায় কথায় জানালাম, ‘বাংলাদেশ থেকে এসেছি’।

কথাটা শুনে উনিশ বছর বয়সী ছেলেটি বলল, আমাদের পূর্বপুরুষদের আদি বাড়ি কিন্তু সিলেটের সুনামগঞ্জে। এই শিলচরের অধিকাংশই কিন্তু বাঙালি। যেজন্য শিলচরকে বলা হয় বাঙালির শহর। 

পরদিন শিলচরের আশপাশে শ্রী শ্রী কাঁচা কান্তি দেবীর মন্দির দেখতে চললাম। ওখানে পৌঁছে শুনলাম, নানান কিংবদন্তিও আছে এখানের দেবীকে ঘিরে।

১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মহালয়াতে নরবলির প্রথাও ছিল মন্দিরে। এখানে আশ্রমও দেখলাম। আশ্রম থেকে বাম হাতি পথে আরও ৩ কিমি গিয়ে খাসপুর। 

এখানেই রয়েছে কাছাড় রাজাদের রাজধানীর ধ্বংসাবশেষ প্রাসাদ, সিংহদ্বার, সূর্যদ্বার, দেবালয়। এসব ঘুরে দেখার সময় জানলাম, ১৬৯০ খ্রিষ্টাব্দের আগে এসব প্রাসাদ গড়ে উঠে ছিল। এখানের প্রতিটি প্রবেশতোরণ হাতির ঢঙে। 

দুপুরে খাওয়াদাওয়া সেরে নিলাম কাছাড় রাজাদের রাজধানী এলাকার কম্পাউন্ডে। শিলচর থেকে ৩৭ কিমি দূরে বাসে গেলাম ভুবননগরে, এখান থেকে আর ৫ কিমি উত্তরে গেলে মণিহরণ সুড়ঙ্গ।

এটি দেখার সময় গাইডের মুখে শুনলাম, ‘ভগবান শ্রীকৃষ্ণ এই সুড়ঙ্গ ব্যবহার করতেন বলে জনশ্রুতি আছে।’ দেখলাম সুড়ঙ্গের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে পুণ্যতোয়া ত্রিবেণি নদী।

একটি মন্দিরের কাছে দাঁড়াতেই দেখা হয়ে গেল এক ঠাকুরের সঙ্গে। তিনিই জানালেন, এখানের মন্দিরে রাম, লক্ষ্মণ, গরু, হনুমানের পূজা হয়। শুধু কী তাই। দোলপূর্ণিমা, বারুনি ও শিব রাত্রিতে উৎসব হয়।

শিলচর শহরটি এতই ভালো লেগে যায়, এজন্য এখানে ৩ দিন থাকা হলো।

এখানে শহরের মধ্যমনি গান্ধীবাগকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি হোটেল,যেমন- হোটেল ইলোরা, কাছাড় ক্লাব, কুসুমানন্দ হোটেল, হ্যাপি লজ,  অজন্তা হোটেল, হোটেল সোয়াঘাট, গ্রান্ডওয়ে হোটেল, গৌতম হোটেল, তৃপ্তি হোটেল।

বরাক উপত্যকার কথা – বরাক উপত্যকা ভারতের অসম রাজ্যের দক্ষিণাংশে অবস্থিত। বরাক উপত্যকার মোট আয়তন ৬৯২২ বর্গকিলোমিটার। 

এই উপত্যকার প্রধান শহর হল শিলচর। 

বরাক নদীর নাম থেকেই এই অঞ্চলের নাম হয়েছে বরাক উপত্যকা। বরাক উপত্যকা আসামের তিনটি প্রশাসনিক জেলা নিয়ে গঠিত – কাছাড়, করিমগঞ্জ এবং হাইলাকান্দি। 

ব্রিটিশ শাসনামলে কাছাড় ছিল কাছাড়ি রাজ্যের মধ্যে এবং করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি আসাম প্রদেশের সিলেট জেলার মধ্যে ছিল। 

বরাক নামটি ব্রা ও ক্রো শব্দ দু’টি থেকে এসেছে। ব্রা অর্থ বিভক্ত হওয়া এবং ক্রো অর্থ উপরের অংশ বা শাখা। বরাক নদীটি করিমগঞ্জ জেলার হরিতিকরের কাছে সুরমা নদী এবং কুশিয়ারা নদীতে বিভক্ত হয়েছে। এই বিভাজিত নদীর শাখাস্রোতকে স্থানীয় মানুষেরা ব্রাক্রো নামে উচ্চারণ করতো। বহুবছর ধরে উচ্চারণ বিকৃতির ফলে ব্রাক্রো নামটি বরাকে পরিনত হয়েছে। 

বরাক উপত্যকায় একমাত্র বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য হল বারাইল। 

বরাক উপত্যকার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব – মৌলানা আবদুল জলিল চৌধুরী, আবদুল মতলিব মজুমদার, কামিনী কুমার চন্দ, অরুণ কুমার চন্দ, ময়নুল হক চৌধুরী, দেবোজিত সাহা, কবীন্দ্র পুরকায়স্থ, ললিত মোহন শুক্লবৈদ্য, সন্তোষ মোহন দেব, উল্লাসকর দত্ত, 

অচ্যুতচরণ চৌধুরী, তপোধীর ভট্টাচার্য, নিলয় দত্ত, পরেশ দত্ত, জ্যোতিন্দ্র দত্ত, তৈমুর রাজা চৌধুরী প্রমুখ 

এবং আরও অনেকে। 

 

করিমগঞ্জ 

 

কি করে ভুলি তোমায় ও করিমগঞ্জ, 

সিলেটের অন্তর্ভুক্ত ছিল করিমগঞ্জ মহকুমা। 

করিম নামে ছিলেন একজন, 

স্থাপন করলেন তিনি গঞ্জ, 

নামটি হল করিমগঞ্জ। 

বাংলা ভাষাভাষি জনগণের বসতি করিমগঞ্জে। 

উপমহাদেশ ভাগাভাগির সময় বাংলাভাষীদের করল দ্বিখণ্ডিত 

করিমগঞ্জকে ছিন্ন করে দেওয়া হল ভারতের অসমে। 

বাংলায় কথা বলে, 

আবার কিনা সিলেটের মহকুমা ;

যারাই দিল সিলেট থেকে বিচ্ছিন্ন করে করিমগঞ্জকে 

তাদের বিবেকবর্জিত – কাণ্ডজ্ঞানহীনতা আর

স্বার্থপরতা আঘাত হানলো বাঙালিদেরকে। 

পঁচাত্তর বছর ধরে করিমগঞ্জ রইল বাংলাদেশ হতে বিচ্ছিন্ন। 

তারাও বাংলায় বলে কথা, আমরাও বলি বাংলায়। 

এ বেদনার কথা কাহারে জানাইরে 

অভিযোগ জানাবার, শুনবার, মিমাংসা করবার কেহ নাই। 

পঁচাত্তর বছর আগেই ছিল না, 

এখন আবার আসবে কোথ থেকে? 

সবই যে স্বার্থপর আত্মমগ্ন ফুলবাবু সেজে লুটপাট করে।  

জয় জয় জয় করিমগঞ্জের জয়। 

 

করিমগঞ্জ হল ভারতের অসম রাজ্যের একটি জেলা শহর। 

জেলা প্রশাসনিক সদর দপ্তর বসেছে এই করিমগঞ্জে। 

করিমগঞ্জের দাপ্তরিক ভাষা বাংলা। 

করিমগঞ্জের স্থানীয় দু’টি পত্রিকা রয়েছে। 

দৈনিক নববার্তা প্রসঙ্গ এবং দৈনিক সাময়িক প্রসঙ্গ। 

করিমগঞ্জ জেলা পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে গঠিত। 

সেগুলো হচ্ছে – করিমগঞ্জ উত্তর ; করিমগঞ্জ দক্ষিণ ; বদরপুর ; পাথারকান্দি এবং রাতাবাড়ি। 

করিমগঞ্জের বিখ্যাত ব্যক্তি – সৈয়দ মুজতবা আলী ;

মহবুবুর রব চৌধুরী। 

১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের আগে সিলেটের অন্তর্ভুক্ত ছিল করিমগঞ্জ। তখন করিমগঞ্জ ছিল মহকুমা। 

১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় বিতর্কিত গণভোটে করিমগঞ্জ সিলেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। 

করিমগঞ্জের প্রশাসনিক বিভাগ – বরাক উপত্যকা।

১৮৭৮ সালে করিমগঞ্জ শহরকে ব্রিটিশ ভারতের নবসংগঠিত আসাম রাজ্যের সিলেট জেলার একটি মহকুমা হিসেবে গঠন করা হয়েছিল। 

করিমগঞ্জের অন্তর্ভুক্ত অঞ্চলগুলি হল রাতাবাড়ী, পাথরকান্দি, বদরপুর। 

১৯৮৩ সালের ১ জুলাই থেকে আসাম সরকার করিমগঞ্জ মহকুমাকে জেলায় রূপান্তরিত করে। 

করিমগঞ্জের বনাঞ্চল একটি সময়ে বন্যপ্রাণীর জন্য সমৃদ্ধ ছিল। কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বন ও বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যায়। করিমগঞ্জের দক্ষিণাঞ্চলকে ধলেশ্বরী বন্যপ্রাণী উদ্যান বলেও অভিহিত করা হয়। 

করিমগঞ্জ রেলজংশন ভারতের উত্তর -পূর্ব সীমান্ত রেলের গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে জংশন স্টেশন। ত্রিপুরার আগরতলা যেতে হলে করিমগঞ্জ স্টেশনের মাধ্যমে যেতে হয়। 

বর্তমানে করিমগঞ্জ জেলাকে তিনটি মহকুমায় ভাগ করা হয়েছে। 

মহকুমা তিনটি হল – করিমগঞ্জ সদর ; পাথারকান্দি এবং রামকৃষ্ণ নগর। 

করিমগঞ্জ জেলায় অসম বিধানসভার ৫ টি সমষ্টি উন্নয়ন ব্লক রয়েছে। যেমন – রাতাবাড়ী ; পাথারকান্দি ; করিমগঞ্জ উত্তর ; করিমগঞ্জ দক্ষিণ এবং বদরপুর। 

করিমগঞ্জ জেলার অন্যতম দর্শনীয় স্থান হলো শনবিল। সৌন্দর্যে ভরপুর একটি বিস্তীর্ণ জলাশয় শনবিল। ভ্রমণবিলাসীদের কাছে শনবিল মানেই ধেয়ে চলার দারুণ সুযোগ এবং চোখ জুড়ানো সব দৃশ্য। শনবিল আয়তনের দিক দিয়ে এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং অসমের মধ্যে বৃহত্তম জলাশয়। জলাশয়টি সমস্ত বছর জুড়ে একইভাবে থাকে না ঋতুভেদে দেখা যায় দুই রকমের রূপ। বর্ষার সময় জলে ভেসে ওঠে আবার শীতকালে শুকিয়ে গেলে সৃষ্টি হয় ধানের ক্ষেতে। বর্ষায় শনবিল হয়ে ওঠে প্রকৃতির এক অপরূপ লীলাভূমি। চারিদিকে রাশি রাশি জল, জলে অর্ধ ডুবন্ত হিজল গাছ, দিগন্তে ভেসে ওঠা সবুজ বন, পড়ন্ত বিকেলের রক্তিম আভা আর জনশূন্য নির্জনতা পর্যটকদের মুগ্ধ করে তোলে। 

শনবিল স্থানীয় মৎস্যজীবীদের অন্যতম জীবিকার উৎস। এই শনবিলের জলে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। তাই প্রতি বছরের বর্ষাকাল স্থানীয় মৎস্যজীবীদের জন্য নিয়ে আসে আশার আলো। 

বরাক উপত্যকার মানুষের কাছে পরিচিত থাকলেও উপত্যকার বাইরে এখনও অপরিচিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর অন্যতম এই ভ্রমণ স্থল শনবিল। 

যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, সচেতনতা ও সরকারের সদিচ্ছা থাকলে শনবিল হয়ে উঠবে আসামের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। 

কিন্তু দুর্ভাগ্য, করিমগঞ্জ জেলাকে অবহেলা করে অসমের সরকারগুলি ১৯৪৭ সালের দেশবিভাগের পর থেকে দীর্ঘ ৭৪ বছর ধরে করিমগঞ্জের শনবিলকে বিশ্ববাসীর চোখের আড়াল করে রেখেছে অসম সরকারগুলো । কিন্তু বর্তমানে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা শনবিলকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে গড়ে তুলছেন পর্যটন কেন্দ্র। 

 

হাইলাকান্দি 

 

ভারতের অসম রাজ্যের বরাকউপত্যকার একটি জেলা হাইলাকান্দি। 

হাইলাকান্দি জেলাটি অসমের একেবারে দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। 

অসমের গুয়াহাটি থেকে হাইলাকান্দির দূরত্ব প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার। 

হাইলাকান্দি জেলাটি বরাক উপত্যকার মাঝামাঝিতে রয়েছে। 

হাইলাকান্দির উত্তর এবং উত্তর -পূর্বদিকে বরাক নদী এবং কাছাড় জেলা অবস্থিত। 

দক্ষিণ এবং দক্ষিণ -পূর্বে মিজোরাম রাজ্য। 

হাইলাকান্দি জেলার আয়তন ৫১২.০১ বর্গমাইল। 

২০১১ সালের গননা অনুযায়ী জনসংখ্যা মোট 

৬,৫৯,২৬০ জন। 

১৯৮৯ সালে অসম সরকার হাইলাকান্দিকে জেলায় রূপান্তরিত করে। 

এরপূর্বে হাইলাকান্দি অসমের কাছাড় জেলার একটি মহকুমা ছিল। 

হাইলাকান্দিতে মহকুমা স্থাপিত হয়েছিল ১৮৬৯ সালে। 

হাইলাকান্দির নামকরণ সম্পর্কে জানা যায়, বরাক নদীতে বান লাগে, এই বানের পরে বাঁচার জন্য দেওয়া বাঁধের স্থানীয় নাম আইল বা হাইল এবং বড়ো -কছারী ভাষায় কান্দি অর্থাৎ এই দুই মিলে নাম হয় হাইলাকান্দি। 

আবার কেউ বলেন, এখানে প্রচুর পরিমাণে উৎপন্ন হতো শালি ধান এবং সেখান থেকেই শাইল কান্দি এবং কালক্রমে এখানকার নামটি হয়েছে হাইলাকান্দি। 

কিছু পণ্ডিতদের মতে, হাইলাকান্দি নামটি সিলেটী হাইলাকুন্দি থেকে এসেছে। 

হাইলাকান্দি জেলায় মোট দু’টি সংরক্ষিত বনভূমি রয়েছে। সে দুটি হল – লাইন সংরক্ষিত বন এবং কাটাখাল সংরক্ষিত বন। 

হাইলাকান্দি জেলায় পাঁচটি উন্নয়ন ব্লক রয়েছে, সেগুলো হল – আলগাপুর, হাইলাকান্দি, লালা, কাটলিছড়া ও দক্ষিণ হাইলাকান্দি। 

হাইলাকান্দি জেলায় মোট ৬২ টি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে। 

হাইলাকান্দি জেলার অর্ধেক জুড়েই অরণ্য। 

কিন্তু দুর্ভাগ্য, বন্যপ্রাণী সমৃদ্ধ থাকা সত্ত্বেও মানব আক্রমণের কারণে বিলুপ্ত হয়ে গেছে অসংখ্য বন্যপ্রাণী। হুলক গিবন, বানর, পিগটেল ম্যাকাকু, হোয়াইট -উইংড উড ডাক, বেগুনি উড পিজিয়ন নামে অসংখ্য দুর্লভ জীবজন্তু ছিল। কিন্তু তা আজ আর নেই। 

হাইলাকান্দি জেলায় জনসংখ্যার প্রায় ৬০.৩১ ভাগ মুসলমান, ৩৮.১০ ভাগ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করে। বাকিরা খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। এই জেলায় বিভিন্ন সম্প্রদায়ের একটি বড় সংখ্যা বসবাস করে। এর মধ্যে রয়েছে – মৈতৈ, বিষ্ণুপ্রিয়া, কুকি, রেয়াং, চাকমা। 

 

 

গোলঘাট 

 

গোলঘাট জেলা হচ্ছে ভারতের অসম রাজ্যের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত একটি জেলা। 

গোলঘাট নামটির উৎপত্তির এক মজার কাহিনী রয়েছে। ১৯ শতকের মাঝামাঝিতে মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীরা সকলে মিলে ধরশিরি নৌকা ঘাটের কাছে কিছু গোলা অর্থাৎ সরু দোকান পেতেছিল। এই স্থানে পরবর্তীতে শহর গড়ে উঠলে গোলাঘাট নামে পরিচিত হতে থাকে। পরবর্তীতে গোলাঘাট থেকে গোলঘাট নাম হয়ে যায়। 

১৬ শতকে দৈয়াং -ধনশিরি উপত্যকা আহোম রাজ্যে শামিল হয়। অহোমরা এই স্থান সহ কছারী অঞ্চল পরে দখল করে নেয়। অহোমের রাজত্বকালে এই স্থানের শাসনের দায়িত্ব মরঙীখোয়া গোঁহাই -এর ছিল। 

ইংরেজ শাসনামলে এই দৈয়াং -ধনশিরি উপত্যকা বৃহত্তর শিবসাগর জেলার অন্তর্গত ছিল। 

গোলঘাট জেলার অভ্যন্তরে রয়েছে তিনটি মহকুমা। 

মহকুমা হল – গোলঘাট সদর, ধনশিরি এবং বোকাখাট। 

গোলঘাট জেলার আয়তন ৩৫০২ বর্গকিলোমিটার। 

জেলায় রূপান্তরিত হয় ১৯৮৫ সালে। 

গোলঘাটের উল্লেখযোগ্য কলেজগুলো হলো – দেবরাজ মহাবিদ্যালয়, গোলঘাট বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়, জে ডি এস জি কলেজ। 

২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে এই জেলার জনসংখ্যা হলো ১০,৫৮,৭০০ জন। 

গোলঘাটের লোকসভাকেন্দ্র – কলিয়াবর। 

বিধানসভা আসন ৪ টি। বোকাখাট, সরুপথার, খুমটাই আর গোলঘাটে। 

গোলঘাট জেলার দর্শনীয় স্থান হল কাজিরাঙা জাতীয় উদ্যান – এই উদ্যানের কিছু অংশ নগাঁও জেলার অভ্যন্তরেও রয়েছে। বিশ্বের একশৃঙ্গ গণ্ডারের দুই -তৃতীয়াংশ কাজিররাঙা জাতীয় অরণ্যে বাস করে। 

আরও দর্শনীয় হল ক্লকওয়াইজ, বেজবাড়োরা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সার্কিট হাউস, ব্যাপটিশ চার্চ, 

ব্রিটিশ কবরস্থান, ডস অ্যান্ড কো স্টোর। 

গোলঘাটের গোলা অর্থ দোকান এবং ঘাট অর্থ নদীর ফেরি অবতরণ পয়েন্ট বা নৌকা রাখার স্থান। 

 

 

শিবসাগর 

 

শিবসাগর জেলা ভারতের অসম রাজ্যের একটি জেলা। ঐতিহাসিকভাবে অতি গুরুত্বপূর্ণ জেলা এই শিবসাগর। আমি বলবো, শিবসাগর ভ্রমণে যিনি যাননি, তিনি যদি গোটা বিশ্ব ঘুরেও দেখেন তবুও তাঁর ভ্রমণ কোনো অবস্থায় সফল হতে পারে না। 

চোখের দেখা, শিবসাগর মনে হয়, বিশ্বের বিস্ময়। 

ছয়শো বছরের অহোম বহু উত্থান -পতনের সাক্ষী এই শিবসাগর। শিবসাগর জেলা জুড়ে রয়েছে অহোম রাজাদের শাসনকালের অনেক স্থাপত্যকীর্তি, ভাস্কর্য, ময়দান, পুকুর, আলিবাট, গড়, শিবদৌল আজানপীরের দরগাহ, কারেংঘর, নিশার শিবসাগর পুকুর, আদি স্থাপনা। 

শিবসাগর জেলার আয়তন মোট ২,৬৬৮ বর্গকিলোমিটার। 

২০০৯ সালের হিসাব অনুযায়ী জনসংখ্যা ২৫,০৮,০২১ জন। 

স্বর্গদেবতা রুদ্রসিংহের মৃত্যুর পর শিবসিংহ রাজসিংহাসনে বসেন। এরপরে শিবসাগরে গড়ে ওঠে অসংখ্য স্থাপত্য কীর্তি। অহোম শাসনের প্রশাসন কেন্দ্র ছিল রংপুর নগর। কারেংঘরকে কেন্দ্র করে চারপাশের অঞ্চলটি ছিল তাহানির রংপুর। ব্রিটিশরা এসে প্রথমে শিবসাগর পুকুরের আশেপাশে এই অঞ্চলের প্রশাসন কেন্দ্র স্থাপন করেছিল। তারপর থেকে কালক্রমে এ অঞ্চল ধীরে ধীরে শিবসাগর নামে পরিচিত হয়। 

শিবসাগরের অর্থনীতি প্রধানত তেল গাছ, চা এবং কৃষির ওপরে নির্ভরশীল। 

শিবসাগর জেলার উত্তরে ব্রহ্মপুত্র নদ, পূর্বে ডিব্রুগড় জেলা, দক্ষিণে নাগাল্যান্ড রাজ্য, পশ্চিমে যোরহাট জেলা। 

শিবসাগর জেলার প্রধান নদনদী সমূহ হল – ব্রহ্মপুত্র, দিচাং, দিখৌ, দরিকা, জাঁজী। 

৩ টি মহকুমা নিয়ে গঠিত শিবসাগর জেলা। মহকুমাগুলি হল – শিবসাগর সদর, নাজিরা, চরাইদেও। 

শিবসাগর জেলার উন্নয়ন ব্লক ৯ টি। এগুলো হল –

আমগুরি, ডিমৌ, গৌরীসাগর, নাজিরা, সোণারি বা দিচাংপানী, লাকুবা, সাপেখাটী, পশ্চিম অভয়পুর ও খেলুবা। 

শিবসাগর জেলায় পৌরসভা শহর ৬ টি। তা হল –

শিবসাগর সদর, শিমুলগুরি, আমগুরি, নাজিরা, সোণারি এবং মরাণহাট। 

শিবসাগর জেলার বিধানসভার নির্বাচনী আসন ৬ টি। আসনগুলি হল – আমগুরি, নাজিরা, মাহমরা, সোণারি, থাওয়া এবং শিবসাগর। 

শিবসাগর জেলার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব – চন্দ্র প্রসাদ সাইকিয়া, দেবব্রত সাইকিয়া, ইমরান শাহ, বেণুধর শর্মা। 

শিবসাগরের উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান – শিবসাগর মহাবিদ্যালয় জয়সাগর ; শিবসাগর ছোবালি মহাবিদ্যালয় ; শিবসাগর বাণিজ্য মহাবিদ্যালয়, গড়গাঁও মহাবিদ্যালয় ; ডিমৌ মহাবিদ্যালয় ; শহীদ পিয়ালি ফুকণ মহাবিদ্যালয় নামতি ; সোণারি মহাবিদ্যালয় ; শিবসাগর সরকারি উচ্চতর মাধ্যমিক বহুমুখী বিদ্যালয় ; গধূলা ব্রাউন মেমোরিয়াল স্কুল ; শিবসাগর জাতীয় বিদ্যালয়। 

শিবসাগরের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানসমূহ – গড়গাঁবের কারেংঘর ; রংঘর ; শিবসাগর পুকুর এবং শিবদৌল ; মৈদাম ; নামদাঙ পাথরের বা শিলের  সাঁকো ; আজানপীরের দরগাহ। 

শিবসাগরের আজানপীরের দরগাহ আসামের হিন্দু মুসলমানের চিরকালীন সম্প্রীতির প্রতীক তথা জিকিরের জন্মদাতা আজান পীরের স্মৃতি রক্ষার্থে নির্মাণ করা একটি মসজিদ। এই দরগাহটি শিবসাগর শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে দিখৌ এবং ব্রহ্মপুত্রের সংগমস্থলের কাছে শরাগুড়ি চাপরিতে। অহোম রাজা তৈরি করা মঠের চিহ্ন এই দরগাহে এখনও দেখতে পাওয়া যায়। বাইরে একটি গড় এবং গড়টির মধ্যে আবার একটি ছোট গড় আছে। এই গড়টির মধ্যে একটি মসজিদ, এর পাশেই একটি কবর ও একটি পুকুর রয়েছে। কবরটিকে আজান পীরের কবর বলে জনশ্রুতি আছে। মঠটির মধ্যে একসারি শরা গাছ আছে। জনশক্তি আছে, এই গাছের তলায় আজান পীর সাহেব সঙ্গীদের নিয়ে একসঙ্গে জিকির করতেন। অহোম রাজা শরা গাছের ১০০ বিঘা মাটি দিয়ে এই গড়টি করে দিয়েছিলেন আজান পীরের জন্য। আর এখানেই আজান পীর তাঁর আস্তানা গড়ে তুলেছিলেন। গোটা বছর জুড়ে দিখৌ মুখের ঘাট দিয়ে আজানপীরের দরগাহে অসংখ্য মানুষের সমাগম হয়। এই সমাধিস্থলটি হিন্দু মুসলমানের মিলনভূমি। 

আজানপীরের আরেক নাম আজান ফকির। তিনি ছিলেন একজন ইসলাম ধর্ম প্রচারক। জিকির গীত রচয়িতা ও কবি ছিলেন। তাঁর প্রকৃত নাম ছিল শাহ মীরান। তিনি আজান পীর, হজরত শাহ মিরান ও শাহ মিলান নামেও বিখ্যাত ছিলেন। ১৬১০ সালে ইরাকের বাগদাদে আজান ফকিরের জন্ম হয়। ইসলাম ধর্ম প্রচারের জন্য তিনি বহু দেশ ঘুরে বঙ্গদেশ হয়ে আসামে প্রবেশ করেন। আজান ফকির কিছুদিন হাজোর হজরত গিয়াসউদ্দিন আউলিয়ার দরগাহে বসবাস করেছিলেন। কালক্রমে আজান ফকির অসমীয়া কন্যা বিবাহ করেন ও নিজের ধর্ম বজায় রেখে অসমীয়া লোক সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে মিশে যান। আজান ফকিরের মৃত্যু ১২০ বছর বয়সে, স্থান শিবসাগরের শরাগুরি সাপরি। 

ভারতের অসম রাজ্যের শিবসাগর ঘুরে দেখার স্মৃতি আজও মন থেকে মুছে যায়নি। 

 

লখিমপুর 

 

লখিমপুর হল ভারতের অসম রাজ্যের একটি জেলা। 

লখিমপুরকে লক্ষীমপুরও বলা হয়। 

লখিমপুর জেলার উত্তরে অরুণাচল প্রদেশ, দক্ষিণে অসমের যোরহাট জেলা ও ব্রহ্মপুত্র নদ, পূর্বে ধেমাজিং জেলা ও ডিব্রুগড় জেলা এবং পশ্চিমে শোণিতপুর জেলা। 

লখিমপুর জেলার সদরদপ্তর বসেছে উত্তর লখিমপুরে। 

লখিমপুর জেলায় মহকুমা দু’টি। একটি উত্তর লখিমপুর সদরে আর অপরটি ঢকুবাখনাতে। 

লখিমপুর জেলার মোট আয়তন ২,২৭৭ বর্গকিলোমিটার। 

২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে এ জেলার জনসংখ্যা ১০,৪০,৬৪৪ জন। 

উত্তর লখিমপুর জেলার উল্লেখযোগ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান  হল – সুবর্ণসিড়ি নদী ; লখিমপুর মহাবিদ্যালয়, লখিমপুর বালিকা মহাবিদ্যালয় ; লখিমপুর বাণিজ্য মহাবিদ্যালয় ; মাধবদেব বিশ্ববিদ্যালয় ; লখিমপুর কেন্দ্রীয় মহাবিদ্যালয় ; লখিমপুর তেলাহী কমলাবরীয়া মহাবিদ্যালয়। 

********************************************************************************************************

 লিয়াকত হোসেন  খোকন —সাংবাদিক,ও  লেখক

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ধরনের আরো সংবাদ