স্টাফ রিপোর্টার, জয়পুরহাটজয়পুরহাটে প্রতিবছর লেটরবাইট ও স্ক্যাবসহ অন্যান্য রোগের প্রাদুর্ভাবে কৃষকদের আলু চাষে লোকসান গুনতে হয়। তবে এবার এসিআই-১০ ভ্যালেনসিয়া জাতের আলুর চাষ করে অধিক লাভ হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি উপস্থিত ছিলেন, মো:আবু জুবাইর হোসেন বাবলু,যুগ্মসচিব-ও মহাপরিচালক.কৃষি মন্ত্রনালয়।
আজ পাঁচবিবি উপজেলার শিরট্রি (ভাড়াহুত) ফসলি মাঠে এ সি আই সীডের ভ্যালেনসিয়া-১০ জাতের আলুর মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শিরট্রি গ্রামের কৃষক মো:ইলিয়াস হোসেন বলেন, প্রতিবছর অন্যান্য জাতের আলুর চাষ করতেন। সেখানে প্রতি বিঘায় উৎপাদন হতো ৭০ থেকে ৮০মন। আর খরচ হতো প্রায় ৩২ হাজার টাকা। এইবার প্রথম এ সি আই সীডের ভ্যালেনসিয়া (এ সি আই-১০) জাতের ৫ বিঘা জমিতে আলু চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় খরচ হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। প্রতি ৩৩ শতাংশের বিঘাতে ৫১ দিন বয়সে আলু পেয়েছে ৫৫ মন,আলু ৮৫ দিন বয়সে উত্তোলন করলে ১৩০থেকে ১৪০ মণ ফলন পাওয়া যায়। রোগবালাই ও খরচ কম ও এবছর বিগত বছরের তুলনায় আলুর বাজার দর বেশী থাকায় এবার লাভ হবে বেশি।
এ সি আই সীডের জেনারেল ম্যানেজার এ কে এম শাহিনুর রহমান বলেন, এ বছর জয়পুরহাট জেলায় ভ্যালেন্সিয়া(এ সি আই-১০) ৯২ মে.টন আলু বীজ বিক্রি করা হয়েছে।আগামী মৌসুমে আরো বেশি পরিমান আলু বীজ সরবরাহ করবে বলে জানান।
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ রাহেলা পারভিন বলেন, ভ্যালেনসিয়া আলুর গাছ ও ফলন দেখে আশা করছি এ আলু চাষ করে লোকসান পুষিয়ে কৃষকরা লাভের মুখ দেখবেন। ৫০/ ৫৫ দিন বয়সে এই আলু উত্তোলন করা যায়। আবার ৮০ থেকে ৯০ দিন রাখলে ফলন বৃদ্ধি পেয়ে ১৪০ মন পর্যন্ত এক বিঘাতে ওজন আসে।
ভ্যালেনসিয়া আলুর মাঠ পরিদর্শনে এসে যুগ্মসচিব-ও মহাপরিচালক মো:আবু জুবাইর হোসেন বাবলু বলেন, এসিআই সীডের ভ্যালেনসিয়া-১০ জাতের আলু পরিরক্ষিত হতে পাঁচ বছর সময় এরপর বাজারজাতের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেটি পর্যবেক্ষনের জন্য সরাসরি আলুর ফসলি মাঠে এসে পরিদর্শন করেছি। এখানে এসে এসিয়া ভ্যালেনসিয়া-১০ জাতের আলু চাষে কৃষকরা লাভবান হবে। কারণ ভ্যালেনসিয়া আলু আবাদে অস্যান্য আলুর চেয়ে উৎপাদন খরচ রোগবালাই অনেক কম। সেই সাথে ভ্যালেনসিয়া আলু চাষে দেশে খাদ্য উতপাদন বৃদ্ধি পাবে।
অনুষ্ঠানে কৃষকদের উদ্দেশে কৃষিবিদরা বলেন, ভ্যালেনসিয়া ডায়মন্ডের সাদৃশ্যপূর্ণ হলেও ডায়মন্ডের অপেক্ষা ২৫-৩০ দিন আগে বাজারে আসে তাই বাজারমূল্য বেশী। এটি ডায়মন্ডের সাদৃশ্যপূর্ণ হলেও এর অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। এছাড়া ভ্যালেনসিয়া জাতের এ আলু হেক্টর প্রতি ফলন প্রায় ৩৯ মেট্রিক টন যা বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় জাত ডায়মন্ডের চেয়ে ৩৮ গুণ বেশী। প্রতিটি আলুর গড় ওজন প্রায় ১০০ গ্রাম।
জয়পুরহাট জেলার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো:দুলাল শেখের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন,
মো:আবু জুবাইর হোসেন বাবলু,যুগ্মসচিব-ও মহাপরিচালক.কৃষি মন্ত্রনালয়।
কৃষিবিদ সরকার শফি উদ্দীন আহমদ, অতিরিক্ত পরিচালক,বগুড়া, মোছাঃ রাহেলা পারভীন, উপপরিচালক, জয়পুরহাট, কৃষিবিদ মোঃ মজিবুর রহমান,অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য),জয়পুরহাট।
কৃষিবিদ লুৎফর রহমান,কৃষি কর্মকর্তা,পাঁচবিবি, এসিআই সীডের বিজনেস ডিরেক্টর জনাব সুধীর চন্দ্র নাথ, জেনারেল ম্যানেজার এ কে এম শাহিনুর রহমান। এরিয়া সেলস্ এক্সিকিউটিভ বগুড়া অঞ্চল, মোহাম্মদ নুরুন্নবী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন, এসিআই সীডের পোর্টফলিও ম্যানেজার গোলাম মোস্তফাসহ আলু বীজ ব্যবসায়ী ও আলু চাষীরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply