লিয়াকত হোসেন খোকন,
রূপনগর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
সত্যজিৎ রায়ের
‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’
ছবিতে অভিনয় করেছিলেন
বীনা –
সে কথা মনে পড়ে?
হিন্দি ছবির অভিনেত্রী বীনার শেষ দিকের ছবি হলো – শতরঞ্জ কে খিলাড়ি, রাজিয়া সুলতানা, ওহ মিলথি, লুবনা, জানোয়ার, মেরা সালাম, পায়েল কি ঝংকার – ইত্যাদি।।
সত্যজিৎ রায়ের ছবি ‘শতরঞ্জ কে খিলাড়ি’তে অভিনয় করে বীনা সারা ভারতবর্ষের প্রতিষ্ঠিত তারকার মর্যাদা পেয়েছিলেন।
ওই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৭ সালে।
এর আগে ১৯৭২ সালে
কামাল আমরোহির ‘পাকিজা’ ছবিতে বীনার অভিনয় দেখে গোটা ভারতবর্ষের তামাম জনতা তাঁকে বাহবা জানিয়েছিল।
বীনার অভিনয়ে মুগ্ধ হয়ে কেউবা ছবিঘরে বসে হাততালিও দিয়েছিল সেই দিনগুলোতে ।
ইদানীংকার তথ্য অনুযায়ী বীনার জন্ম ১৯২৬ সালের ৪ জুলাই বেলুচিস্তানের কোয়েটায়।
বীনা মারা যান ২০০৪ সালের ১৪ নভেম্বর বোম্বেতে।
বীনার মেয়ে হুমা ১৯৯০ সালে বোম্বের ন্যাশনাল কলেজের লেকচারার ছিলেন। বিয়ে হয়েছিল তাঁর কাশ্মীরে। হুমার স্বামী ওই সময় ছিলেন বোম্বের এক সরকারি কলেজের অধ্যাপক।
পুরনো দিনের পত্র পত্রিকায় প্রকাশ, বীনার জন্ম ১৯২৪ সালে পাঞ্জাবের অমৃতসরে।
১৯৩৯ সালে ম্যাট্রিক পাস করার পরে
অমৃতসর কলেজে ভর্তি হলেন তিনি। সে সময় তাঁর বাবা মারা যান। বীনা এবং তার ভাই বোনদের তখন কেউই দেখবার ছিল না।
বড় ভাই শাহজাদা ইফতেখার এরই কয়েক বছর আগে ফিল্মে যোগ দেন।
তাঁরই সহযোগিতায় বীনা প্রথম পাঞ্জাবি ছবিতে অভিনয় শুরু করেন।
বীনা অভিনীত উল্লেখযোগ্য পাঞ্জাবি ছবি হলো –
‘গাবান্ডি’ আর ‘রবি কে পার’।
এই দুই ছবিতে বীনা নায়ক শ্যামের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন।
শ্যাম সম্পর্কে বীনা একবার
বলেছিলেন, ‘আমার কয়েক বছর আগে শ্যাম ফিল্মে আসেন – তখনও ওর নাম হয়নি।
যারজন্য গাবান্ডি ও রভি কে পার – ছবি ২ টি তেমন চলেনি। শ্যাম খুবই সাহসী ছিল। বরাবরই ভ্যাম্প বা খল নায়িকাদের প্রতিই ওর দুর্বলতা দেখেছি। কুলদীপ কাউর ও তাজীর সঙ্গে ওঁর সম্পর্কের কথা কে না জানে।’
বীনা ১৯৪৪ সালে বি, এ পাস করার পরে পুরোদমে ফিল্মে জড়িয়ে পড়েন। তবে এর আগে
কয়েকটি ছবিতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। কলেজে পড়াকালীন সময়ে
ফিল্মে যোগ দিয়ে তিনি মাস মাইনে পেতেন পাঁচ শত টাকা করে। বীনার কাজে মুগ্ধ হয়ে
ফিল্ম কোম্পানি ওঁর বেতন ২ হাজার টাকা পর্যন্ত করে দিয়েছিল।
নাজমা ছবিতে বীনার নায়ক ছিলেন অশোক কুমার।
নাজমা ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৪৩ সালে।
১৯৪৫ সালের ছবি ‘হুমায়ুন’ – এ বীনা রাজপুত রাজকন্যার চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করেছিলেন বলে এখনও অনেকে তা গর্ব সহকারে বলে থাকেন।
‘পহেলী নজর’ এবং ‘নোমায়েশ’ ছবি
দুটি অভিনয় করে বীনা অসম্ভব খ্যাতি পেয়েছিলেন।
পহেলী নজর ছবিতে
তাঁর নায়ক ছিলেন মতিলাল।
১৯৪৭ সালে বীনা সেকালের রূপবান নায়ক আল নাসিরকে বিয়ে করেন।
আল নাসিরের অতি সুন্দর চেহারায় আকৃষ্ট হয়ে মীনা শোরে, মনোরমা ও নাসরিন পর পর তাকে বিয়ে করে এরা কেউই এক বছরের
বেশি সংসার করতে পারেননি।
বীনার এটা প্রথম বিয়ে হলেও তিনি ছিলেন আল নাসিরের চতুর্থ স্ত্রী।
আল নাসিরের বিপরীতে বীনা
১৯৪৯ সালে ‘বিবি’ এবং ১৯৫০ সালে ‘কাশ্মীর’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
নায়িকা হিসেবে বীনার সর্বশেষ ছবি ‘অমর সিংহ’। এ ছবিতে বীনার নায়ক ছিলেন তাঁর স্বামী আল নাসির।
১৯৫৭ সালে আল নাসিরের মৃত্যু হলে
বীনা অনেকটা ভেঙে পড়েন।
দুঃখ ভুলবার জন্য তিনি অনেক ছবির
কাজ হাতে নিয়ে
অভিনয়ের মধ্যে নিজেকে ডুবিয়ে রেখেছিলেন।
বীনা অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবি হলো –
১৯৩৯ সালে – শাস্তিক।
১৯৪১ সালে – কাসুতি।
আশারা।
১৯৪২ সালে – গরীব।
১৯৪৩ সালে – নাজমা।
১৯৪৪ সালে – মা বাপ।
১৯৪৫ সালে – হুমায়ুন। ফুল। পহেলি নজর।।
১৯৪৬ সালে – রাজপুতানি। চিহিন লে আশাদি।
১৯৫০ সালে – রাজ মুকুট। দোলতি নয়া। দাস্তান।
১৯৫১ সালে – সরকার। কাশ্মীর। আফসানা।
১৯৫২ সালে – অন্নদাতা। আসমান।
১৯৫৪ সালে – নাজ।
১৯৫৬ সালে – জল্লাদ। হালাকু।
১৯৫৭ সালে – মেরা সালাম। হামারা হাজ। নয়া জমানা।
মমতাজ মহল।
১৯৫৮ সালে – চলতি কা নাম গাড়ি। মেহেন্দি। কোটা পয়সা।
১৯৫৯ সালে – কাগজ কে ফুল। ছোটি বহেন।
১৯৬৩ সালে – তাজমহল। ফির ওহি দিল লায়া হু।
১৯৬৪ সালে – শেহনাই। বাঘি।
১৯৬৫ সালে – নূর মহল। সিকান্দার – ই – আজম।
১৯৬৬ সালে – আলিবাবা ও ৪০ চোর।
এছাড়া বীনা অভিনীত মনে রাখার মতো আরও কিছু ছবি হলো –
নওজোয়ান, সান্নাত, ছোটি ছে মোলাকাত, শ্রীমতীজী, সাথী, কহি দিন কহি রাত, পাকিজা, বানারসি বাবু, মেরে গরীব নাওয়াজ, দো রাস্তে আনমোল মতি – ইত্যাদি।।
Leave a Reply